রোহিঙ্গা হাফেজা নব বধূর করুণ কাহিনী / Story-Of-Rohingya-Hafeza

 

 

Story-Of-Rohingya-Hafeza

 

রোহিঙ্গা হাফেজা নব বধূর করুণ কাহিনী / Story-Of-Rohingya-Hafeza

মেহদির রাঙ্গা হাত এখনো শরণার্থী ক্যাম্পে। পরনে বিয়ের জামা। মাত্র ১৫দিন আগে এক আলেম তরুণের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সোনার বরণ কুরআনের হাফেজ মেয়েটির। চোখজুড়ে তখন নতুন ভোরের স্বপ্ন। কিন্তু পনের দিনেই তা হয়ে গেল গোধূলির গান। হানাদার সেনাদের রোহিঙ্গা মুসলিম নিধন অভিযানে গুঁড়িয়ে গেল তার ছোট্ট সোনার সংসার। বিয়ের পর রোহিঙ্গা কিশোরী হাফেজা নাজমা জীবনটাই হয়ে যায় অন্য রকম। স্বামীর সঙ্গে ভালোই কাটছিল জীবনের মধুময় দিনগুলো। সকালে একসঙ্গে বসে নাশতা খাওয়ার স্মৃতি, গল্প করার মধুর লগ্ন এখন তাঁর সারা বেলার সঙ্গী। সে কেবল এসব স্মৃতি হাতড়ে বেড়ায় আর কেঁদে বুক ভাসায়। স্বামী চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসা থেকে দুবছর আগে মাওলানা হয়েছিলেন। স্থানীয় একটি মাদরাসার উস্তাদ ছিলেন। ঈদের পাঁচ দিন আগে সকালে গ্রামের মক্তবে আলেমদের একটি বৈঠকে গিয়েছিলেন নাজমার স্বামী ইব্রাহিম। নাজমা সকাল ১১টা পর্যন্ত ছিল তাঁর পথ চেয়ে। ইব্রাহিম দুপুরে ফিরে এলেন ঠিকই, তবে লাশ হয়ে।

 

মিয়ানমারেরর সেনারা গুলি করে কেবল নাজমার স্বামীকেই মারেনি, চুরমার করে দিয়েছে তার সব স্বপ্নসাধ। মগ সেনারা সেদিন ভোরেই গ্রামে এসে প্রথমে সব আলেমদের সাথে একটি শান্তি বৈঠক করার কথা জানায়। গ্রামের মসজিদের মাইকে তা জানানো হয়। সব আলেমরা যেন মক্তবে হাজির হন। জরুরী সরকারি পরামর্শ আছে। সে পরামর্শেই দরজা লাগিয়ে ব্রাশফায়ার করে নাজমার স্বামী মাওলানা ইব্রাহিমসহ নিরস্থ ১৭জন আলেমকে তারা হত্যা করে। এর পর গ্রামে আক্রমন করে। গত সোমবার টেকনাফের থ্যাংখালী আশ্রয়কেন্দ্রে হাফেজা নাজমা বেগম তার জীবনের এই করুণ কাহিনি এভাবেই বর্ণনা করেন। নাজমার বাবা জামান আহমদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, জামাই মারা যাওয়ার পর মেয়ে তার সব সময় চুপচাপ থাকে। ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করে না। একা থাকলে কেবলই কাঁদে। স্বামীকে সে এতটাই ভালোবাসত যে স্বামীর লাশ পর্যন্ত তাকে দেখতে দেওয়া হয়নি। স্বামীর মৃত্যুসংবাদ শোনার পর কয়েক দফা জ্ঞান হারায়। ববিধবা মেয়োির এখনো হাতের মেহদীর দাগ মুছে যায় নি। সারাক্ষন গুনগুনিয়ে কেবল কুরআন পড়ে চোখের পানি ছেড়ে। তার স্বামী ও বাবার বাড়ির সচ্ছ সংসার ছিল। ছিল বড় বাবার বড় মাছের খামার। স্বামীর ভাইরা ছিলেন প্রতিষ্টিত আলেম। সবাই গ্রামের বাহিরে দ্বীনী খেদমত করতেন।

 

তারা কে কোথায় আছেন জীবিত না মৃত তিনি জানেন না। স্বামির পাকা ঘর ছিল। ছিল সাজানো গোছানো সোনার সংসার। স্বামিকে নিয়ে স্বপ্ন সাজিয়েছিলেন জীবনের সাতরঙ্গের। স্বামীর মৃত্যুর পর বাবা তাদের নিয়ে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করেন। চৌদ্দ দিনে পাহাড়-জঙ্গল পেরিয়ে বাংলাদেশে আসে নাজমার পরিবার। এরপর রাস্তায় কেটে যায় বেশ কয়েক দিন। উখিয়ার থ্যাংখালী আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই হয় তাদের। নাজমাদের এখনকার থাকার ঘরটি পাহারের ডালুতে পলিথিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি। দুটি পরিবার এক ঘরে ভাগাভাগি করে থাকে। বৃষ্টি এলে কাঁদামাটিতে দাড়িয়ে থাকতে হয় সারারাত। উপর থেকে পাহারের পানি ঘরের ভিতরে চলে আসে। নাজমা বলছিল, ‘স্বামীর সংসারে অনেক সুখে ছিলাম। রাখাইনের সেনারা কেড়ে নিল আমার স্বামীকে। এরপর আমার জীবনে আর কোনো আনন্দ নেই। আমার কিছুই ভালো লাগে না। কত যে কষ্ট করে বাংলাদেশে এসেছি, আর বাংলাদেশে এসেও অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। ‘আমরা কেউ ভালো নেই। আমাদের জীবন শেষ করে দিয়েছে সেনারা।’ আমরা এই হাফেজা বিধবা বধুর খবর পাওয়ার পর তাঁর কাছে যাই। আমাদের মাস্তুরাতরা তার মধুর তেলাওয়াত শুনে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। সাথে করে ঢাকায় নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন।

 

আইনি জটিলতার কথা ভেবে সেখানেই তার উত্তম জীবনের ফিকির করা হয়। ঢাকার এক মহিলা ডাক্তার নিজের সকল গহেনা বিক্রি করে টাকা আনিয়ে ৪/৫ লক্ষ টাকা খরচ করে মেয়েটির একটি স্থায়ী পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা করেছেন। (আল্লাহ এই বোনটির দানকে উম্মতের হেদায়ত ও মুক্তির জড়িয়া হিসাবে কবুল করুন)। তিনি চাচ্ছেন আল্লাহ যেন বোনটির আগের থেকে আরো উত্তম জীবনের ব্যবস্থা করে দেন। হে আল্লাহ, আলেমদের এই শাহাদতের বিনিময় তুমি আরকানবাসীকে স্বাধীনতা ও সম্মানজনক জীবন দান কর। ঈমানের বলে বলিয়ান কর, আমিন। লিখেছেন – সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ।  

 

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে  জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।

 

 

Islami Dawah Center Cover photo

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টারকে সচল রাখতে সাহায্য করুন!

 

ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার ১টি অলাভজনক দাওয়াহ প্রতিষ্ঠান, এই প্রতিষ্ঠানের ইসলামিক ব্লগটি বর্তমানে ২০,০০০+ মানুষ প্রতিমাসে পড়ে, দিন দিন আরো অনেক বেশি বেড়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

বর্তমানে মাদরাসা এবং ব্লগ প্রজেক্টের বিভিন্ন খাতে (ওয়েবসাইট হোস্টিং, CDN,কনটেন্ট রাইটিং, প্রুফ রিডিং, ব্লগ পোস্টিং, ডিজাইন এবং মার্কেটিং) মাসে গড়ে ৫০,০০০+ টাকা খরচ হয়, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেকারনে, এই বিশাল ধর্মীয় কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছে আপনাদের দোয়া এবং আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন, এমন কিছু ভাই ও বোন ( ৩১৩ জন ) দরকার, যারা আইডিসিকে নির্দিষ্ট অংকের সাহায্য করবেন, তাহলে এই পথ চলা অনেক সহজ হয়ে যাবে, ইংশাআল্লাহ।

যারা এককালিন, মাসিক অথবা বাৎসরিক সাহায্য করবেন, তারা আইডিসির মুল টিমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন, ইংশাআল্লাহ।

আইডিসির ঠিকানাঃ খঃ ৬৫/৫, শাহজাদপুর, গুলশান, ঢাকা -১২১২, মোবাইলঃ +88 01609 820 094, +88 01716 988 953 ( নগদ/বিকাশ পার্সোনাল )

ইমেলঃ info@islamidawahcenter.com, info@idcmadrasah.com, ওয়েব: www.islamidawahcenter.com, www.idcmadrasah.com সার্বিক তত্ত্বাবধানেঃ হাঃ মুফতি মাহবুব ওসমানী ( এম. এ. ইন ইংলিশ, ফার্স্ট ক্লাস )