Parenting-সন্তানকে দ্বীনদার হিসেবে দেখতে চাইলে অবশ্যই লিখাটি পড়ুন।

 

  মুসলিম বাবা-মা হিসেবে কখন থেকে বাচ্চাকে ইসলাম সম্পর্কে ধারনা দিবো? এজ আর্লি এজ পসিবল। মনে হতে পারে বাচ্চা বুঝবে না, কিন্তু ব্রেইন ঠিকই ক্যাচ করে নিবে। একটা রাফ গাইডলাইন আছে এখানে বাচ্চার ১৮-৩৬ মাস বয়সী হলেই এই কাজ গুলি শুরু করে দিবেন ইনশা আল্লাহ। যদিও আমার বাচ্চার ১৩মাস চলছে আলহামদুলিল্লাহ 😍

 

আকিদাহঃ❤️ – আল্লাহ কোথায় আছেন? তোমার রব কে? কে তোমাকে বানিয়েছেন? – বাচ্চার সাথে কথা বলুন আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে (আকাশ, গাছ-পালা, ফুল প্রজাপতি কে বানিয়েছেন?)

 

ডেইলি দুআঃ❤️ – ঘুম থেকে উঠার দু’আ, ঘুমাতে যাওয়ার আগের দু’আ। – খাওয়ার আগের দু’আ, খাওয়ার পরের দু’আ। – হাঁচি দিলে কি বলতে বলতে হয়? – সালামের প্রচার শেখানো, ছোট-বড় সবাইকে সালাম দেয়া। – বাথরুমে যাওয়ার দু’আ, বের হওয়ার দু’আ। – বাসা থেকে বের হওয়ার দু’আ। – সব কাজ করার আগে বিসমিল্লাহ বলা। – যে কোন কাজ করবো বলার আগে ইনশা আল্লাহ বলা, -সুন্দর কিছু দেখলে মাশা আল্লাহ বলা, -কোন কিছু গিফট পেলে জাযাকাল্লাহু খায়ির বলা।

 

কুরআনঃ❤️ – রেগুলার কুরআন বাচ্চাকে সাথে নিয়ে পড়ুন। বাচ্চা পাশে বসে থাকতে পারে। – ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসী, সূরা ফাতিহা, কূল যুক্ত সূরা বাচ্চাকে সাথে নিয়ে পড়েন। খুব দ্রুত দেখবেন বাচ্চা আপনার সাথে পড়ছে।

 

আখলাকঃ❤️ – খাবার এবং পানি ডান হাতে খাওয়া, বসে খাওয়া এবং বিসমিল্লাহ বলে খাওয়া। – যে কোন কাজ করার আগে বাবা-মায়ের পারমিশন নেয়া, ভুল হলে মাফ চাইতে শেখা। – যত ছোট বয়সই হোক, পোশাক বদলানোর সময় লজ্জ্বার ধারনা দেয়া। অন্যদের সামনে বাচ্চার ডায়াপার চেইঞ্জ করবেন না।

তাকে আড়াল রাখুন। লাজুক হতে শিক্ষা দেওয়া…কারন আল্লাহ্ লজ্জাশীলতা পছন্দ করেন। – শেয়ারিং শেখান। যে কোন কিছু অন্যদের সাথে শেয়ার করলে প্রশংসা করুন। ভালো কাজগুলোকে এপ্রিশিয়েট করুন এবং এভাবে ওদের বোঝান যে আল্লাহ এটা পছন্দ করেন, রসূল (সাঃ) এভাবে বলেছেন…আলহাম’দুলিল্লাহ্!

 

সিরাহ্ঃ❤️ – রসূল (সাঃ) এবং সাহাবীদের গল্প বলুন। – ছোট হাদীসগুলো গল্পের মতো করে বলুন। – কুরআনের ঘটনাগুলো নিজের ভাষায় গুছিয়ে বলুন।

 

ইবাদাহঃ❤️ – নামায বাচ্চাকে সাথে নিয়ে পড়ুন। না দাঁড়ালেও খেলার এরিয়া যাতে আশেপাশে থাকে। (সূত্র কৃতজ্ঞতাঃ কনফেশন অফ মুসলিম মামাহোলিক ডট কম।)

 

বাবা-মায়েদের জন্য টিপসঃ – এই বয়সী বাচ্চাদের ধরে-বেঁধে শেখানোর কিছু নেই। নিজেদের লাইফে প্র্যাকটিস করলে, বাচ্চারা দেখেই শিখবে।

নিজের লাইফে নাই কিন্তু আশা করি, বাচ্চাকে শেখাতে পারবো-এই চিন্তা থেকে বের হয়ে আসুন। আমি যদি চাই বাচ্চা ইসলামিক মাইন্ডের হবে, তাহলে আগে নিজেকেই সেই ছাঁচে গড়ে নিতে হবে। মাসনূন দু’আ গুলো বাচ্চাকে সাথে নিয়ে পড়ুন, বাচ্চারা শুনতে শুনতেই শেখে। আলাদা করে শেখানোর দরকার নেই।  

 

বাচ্চাকে আগে আল্লাহকে ভালোবাসতে শেখান।❤   যেমনঃ আল্লাহ রাগ করবেন, এটা বলার বদলে আল্লাহ এভাবে এভাবে করলে খুশি হবেন-এরকম বলতে পারেন। তাকে জানান, আল্লাহই সবচাইতে বেশী ভালোবাসে তাকে, এমনকি বাবা-মায়ের চাইতেও! – রসূল (সাঃ) এর সুন্নাহর প্রতি ভালোবাসা গড়ে তুলুন।

যে কোন ব্যাপারে উনাকেই রোল মডেল করুন। – সুস্থতা- অসুস্থতা আল্লাহর কাছ থেকে আসে, ধারনা দিন। যে কোন ধরনের ব্যাথা পাওয়ায় বা অসুস্থতায় একমাত্রই আল্লাহই তাকে সুস্থ করবে এটা বোঝান।  

 

জান্নাত সম্পর্কে ধারনা দিন। সেটা কত চমৎকার জায়গা সময়ে সময়ে বর্ননা করুন। যাতে এই জায়গায় যাওয়ার ব্যাপারে বাচ্চার আগ্রহ মাথায় গেঁথে যায়। – ছেলে হলে মসজিদের সাথে এটাচমেন্ট তৈরী করে দিন। সম্ভব হলে বাচ্চাকে জামাতে নামায পড়ার সময় সাথে রাখুন। – বাচ্চাকে ভালো মুসলিম হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করুন। ইন শা আল্লাহ্ । রহমানুর রাহিম আমাদের কবুল করুন!!!  

 

প্রশ্নঃ আসসালামু আলাইকুম,সন্তান জন্মের পর আকীকার নিয়মটা জানতে চাচ্ছিলাম।

 

সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর করণীয় :


১. সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পিতা ও নিকট আত্মীয়দের সুসংবাদ প্রদান করা, সন্তানের জনক-জননীকে মোবারকবাদ দেয়া ও তাদের খুশিতে অংশগ্রহণ করা ইসলামের আদর্শ।

যেমন, আল্লাহ তাআলা ইবরাহিমের স্ত্রীকে ইসহাক ও ইয়াকুবের সুসংবাদ প্রদান করেন এবং জাকারিয়া আ.-কে পুত্র সন্তানের সুসংবাদ প্রদান করেন সঙ্গে তার নামও চয়ন করে দেন, ফেরেশতাগণ ইবরাহিমের স্ত্রীকে সন্তান জন্মের সুসংবাদ প্রদান করেন ইত্যাদি।

লক্ষ্য করুন কুরআনের আয়াত : আল্লাহ তাআলা বলেন, আর তার (ইবরাহিমের) স্ত্রী দাঁড়ানো ছিল, সে হেসে উঠল। অতঃপর আমি তাকে সুসংবাদ দিলাম ইসহাকের ও ইসহাকের পরে ইয়া‘কূবের।’ (হুদ : ৭১) অন্যত্র বলেন, ‘অতঃপর ফেরেশতারা তাকে ডেকে বলল, সে যখন কক্ষে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিল, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাকে ইয়াহইয়া সম্পর্কে সুসংবাদ দিচ্ছেন।’।

(আলে ইমরান : ৩৯) আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন, ‘হে যাকারিয়্যা, আমি তোমাকে একটি পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিচ্ছি, তার নাম ইয়াহইয়া। ইতিপূর্বে কাউকে আমি এ নাম দেইনি’। (মারইয়াম : ৭) অন্যত্র বলেন, ‘এতে তাদের (ফেরেশতাদের) সম্পর্কে সে (ইবরাহিমের স্ত্রী) মনে মনে ভীত হল।

তারা বলল,’ভয় পেয়োনা, তারা তাকে এক বিদ্বান্‌ পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দিল’। (জারিয়াত : ২৮) অতএব এসব আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হল যে, ছেলে বা মেয়ে সন্তান জন্মের পর খুশি হওয়া, আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা, নবাগত সন্তানের ব্যাপারে সবাইকে সুসংবাদ প্রদান করা ইসলামের একটি আদর্শ, বরং সওয়াবের কাজ।

ইবনুল কাইয়ূম রহ. বলেন,’যার পক্ষে সুসংবাদ দেয়া সম্ভব হবে না, সে জানার পর সন্তানের জন্য কল্যাণ ও বরকতের দোয়া করবে।’ (তুহফাতুল মওদুদ) হাসান ইবনে আলী রা. কারো সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সংবাদ শুনলে এ বলে দোয়া করতেন। (بورك لك في الموهوب، وشكرت الواهب، وبلغ أشده، ورزقت بره) [النووي في الأذكار].

 

২. সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডান কানে আজান দেয়াঃ সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডান কানে আজান দেয়া সুন্নত। আবুরাফে রা. বর্ণনা করেন, ‘আমি রাসূল সা.-কে হাসান ইবনে আলীর কানে আজান দিতে দেখেছি, যখন সে ফাতেমার ঘরে ভূমিষ্ঠ হয়।’ (আবুদাউদ, তিরমিজি-সহি সূত্রে) বাঁ কানে একামত দেয়া। তবে এ ব্যাপারে যে বর্ণনা পাওয়া যায় তা বিশুদ্ধ সনদে রাসূল সা. থেকে প্রমাণিত নয়, তাই একে সুন্নত জ্ঞান করা শুদ্ধ নয়।

 

৩. তাহনিক করাঃ
ইমাম নববি রহ. বলেন, ‘সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খেজুর দিয়ে তাহনিক করা সুন্নত। অর্থাৎ খেজুর চিবিয়ে নবজাতকের মুখের তালুতে আলতোভাবে মালিশ করা এবং তার মুখ খুলে দেয়া যাতে তার পেটে এর কিছু অংশ প্রবেশ করতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, কতক আলেম বলেছেন, খেজুর সম্ভব না হলে অন্য কোন মিষ্টি দ্রব্য দিয়ে তাহনিক করা। তিনি আরো বলেন, আমার জানামতে সব আলেমই তাহনিক করা মুস্তাহাব বলেছেন, এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত সম্পর্কে আমার বলে জানা নেই।

(শরহে মুহাজ্জাব : ৮/৪২৪) আনাস রা. বলেন,’আব্দুল্লাহ ইবনে আবুতালহা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আমি তাকে রাসূল সা. এর নিকট নিয়ে যাই, তিনি বললেন, ‘তোমার সঙ্গে কি খেজুর আছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। রাসূল সা. খেজুর চিবালেন, অতঃপর তা বের করে বাচ্চার মুখে দিলেন।

বাচ্চাটি জিহ্বা দিয়ে চুষে ও ঠোঁটে লেগে থাকা অংশ চেটে খেতে লাগল। রাসূল সা. এ দৃশ্য দেখে বললেন, ‘দেখ, আনসারদের খেজুর কত প্রিয়! (মুসলিম) আবুমুসা রা. বলেন, ‘আমার একটি সন্তান জন্ম হয়, আমি তাকে রাসূল সা.-এর নিকট নিয়ে আসি, রাসূল সা. তার নাম রাখেন ইবরাহিম অতঃপর খেজুর দিয়ে তার তাহনিক করেন, তার জন্য বরকতের দোয়া করেন ও আমার কাছে ফিরিয়ে দেন, এটা আবুমুসার বড় সন্তানের ঘটনা। (বুখারি-মুসলিম)

 

৪. সপ্তম দিন মাথা মুণ্ডন করা ও চুলের ওজন বরাবর রুপা সদকা করাঃ আনাস ইবনে মালেক রা. বলেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সপ্তম দিন হাসান ও হুসাইনের চুল কাটার নির্দেশ দেন এবং চুলের ওজন পরিমাণ রুপা সদকা করেন। ছেলে বা মেয়ে সব বাচ্চার সপ্তম দিন চুল কাটা সুন্নত।

সাহাবি সামুরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, ‘প্রত্যেক সন্তান তার আকিকার বিনিময় বন্ধক হিসেবে রক্ষিত। অতএব সপ্তম দিন তার পক্ষ থেকে আকিকা করা, তার চুল কাটা ও তার নাম রাখা।’ (আহমদ, তিরমিজি-সহি সূত্রে) বাচ্চার চুলের ওজন পরিমাণ রূপা সদকা করা সুন্নত।

আলী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. হাসানের পক্ষ থেকে একটি বকরী আকিকা দিয়েছেন এবং বলেছেন,’হে ফাতিমা, তার মাথা মুণ্ডাও ও তার চুলের ওজন পরিমাণ রূপা সদকা কর।’ (তিরমিজি) হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি রহ. বলেন, ‘সব বর্ণনাতেই রুপার কথা এসেছে।’ (তালখিসুল হাবির) হ্যাঁ, কতক বর্ণনাতে রুপা বা স্বর্ণ সদকার কথা বলা হয়েছে।

 

৫. আকিকা করাঃ
আকিকার অর্থ : আল্লাহর দরবারে নজরানা পেশ করা, শুকরিয়া আদায় করা, জানের সদকা দেয়া ও আল্লাহর নেয়ামতের মোকাবিলা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। ইসলামি পরিভাষায় আকিকা হচ্ছে, নবজাতকের পক্ষ থেকে পশু জবেহ করা।

অধিকাংশ আলেমদের নিকট আকিকা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। ইবনে আব্বাস রা. বলেন,’রাসূল সা. হাসান এবং হুসাইনের পক্ষ থেকে একটি করে বকরী জবেহ করেছেন।’ (আবুদাউদ-সহি সূত্রে) আনাস রা.-এর বর্ণনায় রয়েছে, দুটি বকরী জবেহ করেছেন। খায়সামি বলেছেন আনাসের বর্ণনাটি বুখারি-মুসলিমের সমতুল্য।

ইমাম মালেক রহ. তার মুয়াত্তায় বর্ণনা করেন, রাসূল সা. বলেছেন,’যার কোন সন্তান হয় সে যদি তার সন্তানের পক্ষ থেকে কুরবানি পেশ করতে চায়, তবে তা করা উচিত।’ তিনি আরো বলেন, ‘প্রত্যেক সন্তান তার আকিকার বিনিময় বন্ধক হিসেবে রক্ষিত।

সপ্তম দিন তার পক্ষ থেকে আকিকা করা, নাম রাখা ও চুল কাটা কর্তব্য।’ (আহমদ ও সুনান গ্রন্থসমূহ, তিরমিজি হাদিসটি সহি বলেছেন) ছেলের পক্ষ থেকে দু’টি ও মেয়ের পক্ষ থেকে একটি বকরী আকিকা করা সুন্নত। আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘ছেলের পক্ষ থেকে প্রতিদান হিসেবে দুটি বকরী ও মেয়ের পক্ষ থেকে একটি বকরী আকিকা দেয়া।’

তবে সুন্নত হচ্ছে সপ্তম দিন, তা সম্ভব না হলে ১৪তম দিন বা ২১তম দিন আকিকা করা। বুরায়দা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন,’সপ্তম দিন, অথবা চতুর্দশ দিন অথবা একুশতম দিন আকিকা করা। কোন কারণে কেউ এসব দিনে আকিকা করতে সক্ষম না হলে, যখন সম্ভব তখনই করবে, এর জন্য কোন নির্দিষ্ট সময়-সীমা নেই। তবে, যথা সম্ভব দ্রুত করাই হচ্ছে উত্তম।

রাসূল সা. কথা ও কাজের মাধ্যমে আকিকার প্রমাণ রেখেছেন। সালমান দাব্বি থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, ‘বাচ্চার সঙ্গে আকিকা রয়েছে। সুতরাং তোমরা তার পক্ষ থেকে আকিকা কর এবং তার শরীর থেকে কষ্টদায়ক জিনিস হটিয়ে দাও।’

(বুখারি) উম্মে কুরজ আল-কাবিয়া বলেন, আমি রাসূল সা.-কে আকিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি, তিনি বলেন,’ছেলের পক্ষ থেকে দুটি আর মেয়ের পক্ষ থেকে একটি পশু, নর-মাদি যে কোন প্রকার হলেই চলে, এতে কোন সমস্যা নেই।’

(আবুদাউদ, নাসায়ি) জমহুর ফুকাহায়ে কেরাম আকিকার গোস্ত পাকানোকে মুস্তাহাব বলেছেন, এমনকি যা সদকা করা হবে তাও। হ্যাঁ, পাকানো ব্যতীত বণ্টন করে দেয়াও বৈধ। আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, ‘ছেলের পক্ষ থেকে সমমানের দুটি আর মেয়ের পক্ষ থেকে একটি বকরী জবেহ করা।’

(আহমদ, তিরমিজি, তিরমিজির নিকট হাদিসটি হাসান ও সহি) অন্য বর্ণনায় আছে, রাসূল সা. আমাদেরকে মেয়ের পক্ষ থেকে একটি এবং ছেলের পক্ষ থেকে দুটি বকরী জবেহ করার নির্দেশ দিয়েছেন।’ (তিরমিজির নিকট হাদিসটি সহি ও হাসান) সমমানের অর্থ বয়স, জাত, লিঙ্গ ও গোস্তের দিক দিয়ে সমমানের হওয়া। উল্লেখ, ওলামায়ে কেরাম ইয়াতিম সন্তানের আকিকা তার সম্পদ থেকে দিতে নিষেধ করেছেন।

 

৬. নাম রাখাঃ ভূমিষ্ঠ হওয়ার প্রথম দিন বা সপ্তম দিন নব জাতকের নাম রাখা সুন্নত। রাসূল সা. বলেন, ‘আজ রাতে আমার একটি সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে, আমি তার নামকরণ করেছি ইবরাহিম, আমার পিতা ইবরাহিমের নামানুসারে।’ (মুসলিম) ইমাম আবুদাউদ, আহমদ, দূরগামী, ইবনে হিমবান্‌ ও কাহাদের বর্ণনাতীত হাদিসের ভাস্বতী নবজাতকের নাম সুন্দর রাখা সুন্নত।

রাসূল সা. বলেন ‘কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে তোমাদের নিজ নামে ও তোমাদের বাপ-দাদাদের নামে আহ্বান করা হবে, অতএব তোমরা তোমাদের নাম সুন্দর করে নাও।’ মুসলিমের হাদিসে রয়েছে, আল্লাহর পছন্দনীয় ও সর্বোত্তম নাম হচ্ছে’আব্দুল্লাহ’ ও’আব্দুর রহমান।’

আবুদাউদের হাদিসে রয়েছে, সবচেয়ে সত্য নাম হচ্ছে’হারিস’ ও’হাম্মাম’ আর সব চেয়ে ঘৃণিত নাম হচ্ছে হারব’ ও’মুররাহ’।’ সবচেয়ে সত্য বলা হয়েছে এ হিসেবে যে, এ নামগুলোর অর্থের সঙ্গে মানুষের কর্ম ও প্রকৃতির শতভাগ মিল রয়েছে।

কারণ, ‘হারিস’ শব্দের অর্থ হচ্ছে কর্মজীবি ও উপার্জনকারী আর’হাম্মাম’ শব্দের অর্থ হচ্ছে আকাঙ্ক্ষী ও ইচ্ছা পোষণকারী। প্রত্যেক মানুষের প্রকৃতির মধ্যে এ স্বভাব শতভাগ বিদ্যমান, তাই এগুলো হচ্ছে সবচেয়ে সত্য নাম। পক্ষান্তরে হারব শব্দের অর্থ হচ্ছে যুদ্ধ-বিগ্রহ আর মুররাহ শব্দের অর্থ হচ্ছে তিক্ততা-বিষাক্ততা।

যেহেতু এসব শব্দ থেকে অশুভ লক্ষণ বুঝে আসে তাই এসব নামকে সবচেয়ে ঘৃণিত নাম বলা হয়েছে। এর দ্বারা বুঝে আসে যে, অর্থ ভাল এমন শব্দ দ্বারা নামকরণ করা মুস্তাহাব। যেমন, নবিদের নাম, ফেরেশতাদের নাম, জান্নাতের নাম ও যেসব শব্দের অর্থ ভাল।


আকীকার গোস্ত বণ্টন নিয়ে কোথাও কোথাও বিভ্রান্তি দেখা যায়। অনেকের ধারণা, সন্তানের আকীকার গোস্ত মা-বাবা খেতে পারবে না, বরং আশেপাশের ঘর-বাড়ি এবং গরীব-মিসকীনের মাঝে বিলিয়ে দিতে হবে, এ ধারণা ঠিক নয়, আকীকার গোস্ত সন্তানের মা-বাবা,পরিবার পরিজন,আত্নীয় স্বজন,প্রতিবেশী বা মিসকীন যে কেউ খেতে পারবে।

(দ্র.সুনানে বায়হাকী, খ.৯ পৃ. ৩০২;মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদীস ২৪৭৩৯,২৪৭৪৯; ইলাউস সুনান, খ.১৭ পৃ.১২৬; তুহফাতুল মাওদূদ পৃ. ৭৮) উত্তর দিয়েছেন – শাইখ আব্দুল্লাহ আল মামুন

 

 

আইডিসির সাথে যোগ দিয়ে উভয় জাহানের জন্য ভালো কিছু করুন!

 

আইডিসি এবং আইডিসি ফাউন্ডেশনের ব্যপারে  জানতে  লিংক০১ ও লিংক০২ ভিজিট করুন।

আইডিসি  মাদরাসার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

আপনি আইডিসি  মাদরাসার একজন স্থায়ী সদস্য /পার্টনার হতে চাইলে এই লিংক দেখুন.

আইডিসি এতীমখানা ও গোরাবা ফান্ডে দান করে  দুনিয়া এবং আখিরাতে সফলতা অর্জন করুন।

কুরআন হাদিসের আলোকে বিভিন্ন কঠিন রোগের চিকিৎসা করাতেআইডিসি ‘র সাথে যোগাযোগ করুন।

ইসলামিক বিষয়ে জানতে এবং জানাতে এই গ্রুপে জয়েন করুন।